কক্সবাজার সম্পর্কে রচনা
কক্সবাজার সম্পর্কে রচনা আমরা আমাদের আজকের আর্টিকেলে দেশের বৃহত্তম পর্যটন শহর নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব। আপনাদের বিভিন্ন প্রয়োজনে রচনা দরকার পরে।
দেশের বৃহত্তম পর্যটন শহর কক্সবাজার নিয়ে যাবতীয় বিষয় ভিত্তিক সূচনা থেকে উপসংহার পর্যন্ত সম্পূর্ণ ইতিহাস ও সোন্দর্যের ব্যাপারে বিস্তারিত নিচে রচনা তৈরি করে দেখানো হল।
- ভূমিকা
- ভৌগোলিক অবস্থান
- ঐতিহাসিক গুরুত্ব
- প্রাকৃতিক সোন্দর্য
- পর্যটন কেন্দ্র
- অর্থনৈতিক গুরুত্ব
- পরিবেশগত গুরুত্ব
- ভবিষ্যৎ গুরুত্ব
- উপসংহার
ভূমিকা
কক্সবাজার সম্পর্কে রচনা ভূমিকাঃ কক্সবাজার বাংলাদেশের দক্ষিন-পূর্বাঞ্চলে
অবস্থিত পৃথিবীর দীর্ঘতম বালুকাময় সমুদ্র সৈকত হিসেবে পরিচিত। বিশ্ব এই সমুদ্র
সৈকতকে এক নামে চেনে। বঙ্গোপসাগরের গা ঘেষে এর অবস্থান এবং এই স্থানটি কক্সবাজার
শহর যেমন গুরুত্বপূর্ণ তেমন এই শহরের জন্য এক আর্শিবাদ স্বরূপ।
শহরকে দিয়েছে এক দারুন প্রাকৃতিক সম্পদ। প্রাকৃতিক সোন্দর্যে ভরপুর এই স্থান শুধু
দেশীয় নয়, আন্তর্জাতিক পর্যটকদের জন্য দারুন ভাবে পরিচিত এবং আকর্ষণীয়।
বাংলাদেশের এই কক্সবাজার শহর বিশ্বের দরবারে এক গর্বের বিষয়।
ভৌগোলিক অবস্থান
কক্সবাজার সম্পর্কে রচনা ভৌগলিক অবস্থানঃ বাংলাদেশের কক্সবাজারের অবস্থান ভৌগলিক
অবস্থানের দিক দিয়ে দেখা যায় বঙ্গোপসাগরের কোল ঘেঁষে রয়েছে। বাংলাদেশের রাজধানী
ঢাকা থেকে ৩৯২ কিলোমিটার এবং চট্টগ্রাম থেকে ১৫০ কিলোমিটার দক্ষিণে কক্সবাজারের
অবস্থান।
ভৌগলিক দিক দিয়ে কক্সবাজার একটানা ১২০ কিলোমিটার দীর্ঘ নিয়ে বৃস্তৃত। এতবড় এর
অবস্থান পর্যটকরা ছড়িয়ে ছিটিয়ে অবস্থান করে সমুদ্র সৈকত উপভোগ করতে পারে।
কক্সবাজারের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে মায়ানমারের আরাকান পাহাড় যা কক্সবাজারের
সোন্দর্যকে আরো বাড়িয়ে তুলে।
ঐতিহাসিক গুরুত্ব
কক্সবাজার সম্পর্কে রচনা ঐতিহাসিক গুরুত্বঃ কক্সবাজার নিয়ে বিভিন্ন ঐতিহাসিক
স্মৃতি বর্ণনা করা আছে। ঐতিহাসিক যুগ থেকে বিভিন্ন ঘটনবলির সাথে কক্সবাজার সমৃদ্ধ
আছে। পূর্বে কক্সবাজারের নাম ছিল পালংকী। ১৭৯৯ সালে ক্যাট্পেন হিরাম কক্স নামে
একজন ইস্ট ইন্ডিয়ার কোম্পানির অফিসার এই কক্সবাজারে বাণিজ্যিক ভাবে ব্যবসার জন্য
এসেছিলেন এবং তার নামকরণ অনুযায়ী পরবর্তীতে কক্সবাজার নাম করা হয়। ব্রিটিশ
শাসনামল থেকেই এই কক্সবাজার বাণিজ্যিক কেন্দ্র ছিল এবং এখন বাংলাদেশের পর্যটন
কেন্দ্র।
প্রাকৃতিক সোন্দর্য
কক্সবাজার সম্পর্কে রচনা প্রাকৃতিক সোন্দর্যঃ কক্সবাজারের প্রাকৃতিক সোন্দর্য
নিয়ে নতুন করে কিছু বলার নাই কারণ এর প্রাকৃতিক সোন্দর্যের দিক দিয়ে অন্যসব
স্থানের চেয়ে এর জনপ্রিয়তা বেশি। এতবড় একটি সমুদ্র সৈকতের বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন
রূপ দেখা মিলে। হিমছড়ির জলপ্রপাত, ইনানী সৈকতের রঙ্গিন পাথর, স্বচ্ছ পানির
জলপ্রপাত পর্যটকদের জন্য দারুণ অভিজ্ঞতা।
প্রাকৃতিক সোন্দর্যের ভরপুর এই স্থানে বালুতে আচ্ছন্ন এই সমুদ্র সৈকতে
সূর্যাদয়-সূর্যাস্থ, নীল জলরাশি, সাদা বালি, সমুদ্রের ঢেউ এর গর্জন ইত্যাদি দেখতে
পাওয়া যায়। স্থান ভিত্তিক যেমন লাবণী পয়েন্ট, কলাতলী পয়েন্ট, হিমছড়ি ইত্যাদি
স্থানে ভিন্ন ভিন্ন প্রাকৃতিক সোন্দর্য দেখা মিলে। প্রাকৃতিক সোন্দর্য পাশাপাশি
সমুদ্র বন বিভাগের রুপ দেখতে পাওয়া যায়।
পর্যটন কেন্দ্র
কক্সবাজার সম্পর্কে রচনা পর্যটন কেন্দ্রঃ কক্সবাজারে যে শুধু সমুদ্র সৈকত আছে তা
নয় এইখানে পর্যটনদের থাকার জন্য রয়েছে বিলাস বহুল হোটেল এবং রেস্টুরেন্ট। স্থানিয়
খাবারে থাকে সমুদ্রিক মাছের শ্বাদও বিভিন্ন স্থানিয় খাবার। স্থানীয় হোটেল গুলো
রয়েছে সৈকত এলাকায় যা হোটেলে বসে পরিবেশ উপভোগ করা যায়।
রয়েছে বিভিন্ন স্পট যেমন হিমছড়ি, ইনানী সমুদ্র সৈকত, সেন্ট মার্টিন দ্বীপ,
মহেশখালি দ্বীপ, রামু বোদ্ধবিহার, ডুলাহাজারা সাফারি পার্ক এইসব স্থান
পর্যায়ক্রমে শহরের আশেপাশে অবস্থিত পর্যটনদের জন্য এক দারুণ অভিজ্ঞতা সম্পূর্ণ
জায়গা। পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে এইখানে রয়েছে বিভিন্ন বিনোদন কেন্দ্র যেমন স্কুবা
ডাইভিং, সার্ফিং, নৌকা ভ্রমণ ইত্যাদি পর্যটন কেন্দ্র গুলো পর্যটকদের জন্য পরিবেশ
বান্ধব।
অর্থনৈতিক গুরুত্ব
কক্সবাজার সম্পর্কে রচনা অর্থনৈতিক গুরুত্বঃ অর্থনৈতিক দিক দিয়ে কক্সবাজার
বাংলাদেশের দারুণ ভূমিকা রাখে। প্রতিবছর দেশি-বিদেশী হাজার হাজার পর্যটক এই
কক্সবাজারে যাওয়া আসা করে এবং এর ফলে স্থানীয় অর্থনৈতিক গতীশিলতা বাড়ে।
তবে পর্যটন কেন্দ্র ছাড়াও কক্সবাজারে উৎপাদিত হয় লবন এবং সাম্রুদ্রিক মাছ যা
দেশীয় বাজারের অর্থনৈতিক অবস্থাকে সচল রাখে। গভীর সমুদ্রবন্দর প্রকল্প এবং
পর্যটনখাতের জন্য এই অঞ্চলকে অর্থনৈতিক অবস্থাকে আরো গতিশীলতা করেছে।
পরিবেশগত গুরুত্ব
কক্সবাজার সম্পর্কে রচনা পরিবেশগত গুরুত্বঃ কক্সবাজারের পরিবেশগত গুরুত্ব শহরটির
ব্যাপক ভূমিকা পালন করে। সমুদ্রীয় অঞ্চল সুধু যে পানি আর বালি আছে তা নয় রয়েছে
ম্যানগ্রোভ বনভূমি, রয়েছে পাহাড়ী অঞ্চল যা স্থানটির পরিবেশ রক্ষায় দারুণ ভাবে কাজ
করে। অসংখ্য পর্যটকের মাঝেও প্রকৃতির রয়েছে গুরুত্ব। তাই পরিবেশ রক্ষায় স্থানিয়
বাসিন্দাদের পাশপাশি পরিবেশ রক্ষায় এবং উন্নয়ানে গোণ্যমাণ্য দায়িত্বরত
ব্যাক্তিদের কাজ করতে হবে।
ভবিষ্যৎ গুরুত্ব
কক্সবাজার সম্পর্কে রচনা ভবিষ্যৎ গুরুত্বঃ ভবিষ্যৎ এর কথা চিন্তা রেখে কক্সবাজার
পর্যটন স্থানকে আরো বেশি করে গুরুত্বদিতে হবে। কারণ প্রতিবছর হাজার হাজার
পর্যটকদের ভিড়ে পর্যটন স্থানের পরিবেশ দূষণ হয়ে থাকে আর এই ভাবে প্রতিবছর দূষণ
হয়ে থাকলে পরিবেশের ক্ষতি সাধণ হতে থাকবে।
ভবিষ্যৎ এর কথা চিন্তা রেখে বেসরকারী বা সরকারী উদ্যোগে বিভিন্ন উন্নয়ন মূলক কাজ
করতে হবে। পরিবেশ রক্ষায় পরিকল্পিত পর্যটন এবং পরিবেশবান্ধব অবকাঠামো উন্নয়ন
কক্সবাজারকে বৈশ্বিক পর্যটনের শীর্ষে নিয়ে যেতে পারে। ভবিষ্যৎতের কথা চিন্তা করে
কক্সবাজারকে আরো বেশি গুরুত্বদিয়ে দেখতে হবে।
উপসংহার
উপসংহারঃ পরিশেষে বলা যায় যে কক্সবাজার প্রাকৃতিক সোন্দর্যে এবং পর্যটন কেন্দ্র
হিসেবে ভরপুর এক রাজ্য। এর অপরূপ সোন্দর্য বিশ্ববাসীর কাছে দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।
আন্তর্জতিক পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে বাংলাদেশের কক্সবাজার স্বীকৃতি হিসেবে বিবেচিত
পাওয়া আমাদের দাবি এবং আমাদের গর্বের বিষয়। তাই কক্সবাজারকে বিশ্বের দরবারে আরো
সমলাচোনা করতে হলে এর পেছনে সরকারকে আরো কাজ চালিয়ে যেতে হবে।
নেক্সাস আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url