খেজুরের গুড়ের জন্য বিখ্যাত কোন জেলা - যশোরের খেজুরের গুড়

ভূমিকা

খেজুরের গুড়ের জন্য বিখ্যাত কোন জেলা যশোরের খেজুরের গুড় দাম কত জানতে চান তাহলে আপনি সঠিক জায়গায় এসেছেন। আমরা আপনাদের বলবো কিভাবে খাঁটি খেজুরের গুড়ের বিখ্যাত জেলা গুলো চিনবেন ও খেজুরের গুড়ের বর্তমান দাম।

খেজুরের-গুড়ের-জন্য-বিখ্যাত-কোন-জেলা
বাজারে অনেক গুড় দেখেন কিন্তু কোনটা খাঁটি গুড় বুঝবেন কি করে। আমরা এমন কিছু তথ্য তুলে ধরবো আজকের আর্টিকেল যে বাজারে গেলে খুব সহজেই বিখ্যাত জেলার গুড়গুলো আপনি চিনতে পারবেন। তাই ধৈর্য সহকারে আর্টিকেলটি পড়ার অনুরোধ করা হলো।

পেজ সূচিপত্রঃ খেজুরের গুড়ের জন্য বিখ্যাত কোন জেলা - যশোরের খেজুরের গুড়

নিচের যেকোন অংশ পড়তে চাইলে ক্লি করুন

খেজুরের গুড়ের জন্য বিখ্যাত কোন জেলা

খেজুরের গুড়ের জন্য বিখ্যাত কোন জেলা তা আমরা অনেকে জানি। আমরা অনেক সময় খাঁটি খেজুরের গুড় কেনার জন্য অনেক জায়গায় ঘুরাঘুরি করি কিন্তু ভালো গুড়ের খোজ মিলেনা তাই আপনাদের বলবো বাংলাদেশের বিখ্যাত যশোর, ফরিদপুর ও রাজশাহী জেলাই খেজুরের গুড়ের জন্য বিখ্যাত। রাজশাহী জেলার চেরঘাট এ খেজুরের গুড়ের সুনাম রয়েছে।      

এছাড়াও জেলার কিছু অংশ যেমন বসিরহাট, সাতক্ষীরা মহকুমায়, চব্বিশ পরগনা এবং চারঘাটে ব্যাপকভাবে খেজুরের গাছের চাষ হতো চাষ হতে গাছ থেকে রস বের করে খাঁটি খেজুরের গুড় বানানো হতো। সেই কারনে এলাকাগুলো খেজুরের গুড়ের জন্য বেশ জনপ্রিয় এখনও গুড় তৈরি করা হয়।যদি খাঁটি গুড় পেতে চান তাহলে জেলা গুলো থেকে একবার ঘুরে আসতে পারেন।

যশোরের খেজুরের গুড়

যশোরের খেজুরের গুড় খেজুরের জন্য বিখ্যাত কোন জেলা আমরা অনেকে জানিনা। যশোরের গুড় সময়ের সাথে পরিবর্তনের ফলে তাদের এই ঐতিহ্য আসতে আসেতে শেষ হতে চলেছে। বিভিন্ন পরিস্থির করনে ঐতিহ্য খেজুরের গুড় ধরে রাখতে যশোর বাসী একটি সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে অনলাইনের মাধ্যমে বিক্রয় করবে। কারন বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ আসে তাদের গুড় কিনতে।

তাদের গুড়ের ঐতিহ্য ধরে রাখতে তারা যশোরের চৈাগাছায় https://khejurgurerhat.com ওয়েবসাইটটি উদ্বোধন করে। আপনার চাইলে অনলাইনের মাধ্যমে ওয়েবসাইট থেকে খাটি খেজুরের গুড় অর্ডার দিতে পারেন। বাংলাদেশের যে কোন প্রান্তে তারা পৌছিয়ে দিবে। যশোরের খাঁটি খেজুরের পাটালি গুড় নিতে চাইলে এখনি যোগাযোগ করুন তাদের ওয়েবসাইটে।

খেজুরের গুড় দাম

খেজুরের গুড়ের দাম যদি বলতে যাই তাহলে বর্তামানে সকল জিনিসের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। আপনি যদি খাঁটি পাটালি খেজুরের গুড় কিনতে চান তাহলে আপনাকে বাজার চষে বেড়াতে হবে ভালো গুড় খুজে পাওয়ার জন্য। ভালো খারাপ গুড় সব একসাথেই বিক্রয় করা হয় তবে আপনাকে ভালো মানের গুড়টি খুজে বের করে দামাদামি করে নিতে হবে। ঝোলা বা লালী গুড় ২০০ থেকে ৩০০ টাকা কেজী, চিটা গুড় ১০০ টাকা কেজির মধ্যে থাকে।
গুড় কেজি
পাটালি গুড় ৩০০ থেকে ৫০০
ঝোলা/লালি গুড় ২০০ থেকে ৩০০
চিটা গুড় ১০০ টাকার ভেতরে
গত বছরে যেই পাটালি গুড়ের দাম ২০০ থেকে ৪০০ টাকার ভেতরে ছিল কিন্তু এই বছরে তা হয়ে দাড়িয়েছে ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা কেজি। দাম বাড়ার কারন হলো গ্রাম গঞ্জে গাছের সংখ্যা কমে যাওয়া আবার গাছিরা অনেকে এই পেশা ছেড়ে দিচ্ছে যার ফলে রস সংগ্রহ কম হচ্ছেে এবং দাম দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে শীতের মৌসুমে গ্রামে শুধু গুড়ের হাট বসে হাট গুলোতে দাম কম পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

খেজুরের গুড় চেনার ১০ উপায়

খেজুরের গুড় চেনার ১০ উপায় সম্পর্কে আজকে আপনাদের বলবো কিভাবে খাঁটি খেজুরের গুড় চিনবেন। শীত মানেই পিঠা পুলির উৎসব গ্রামে গঞ্জে এই পিঠা পুলির উৎসব বেশি দেখা যায়। তাই পিঠা তৈরিতে অবশ্যই গুড় ছাড়া অসম্ভব। খাঁটি গুড়ে পিঠা ভালো হয় স্বাদ ও গন্ধ্যে ভরপুর। কিন্তু খাঁটি গুড় না হলে পিঠা খেতে মজা পাওয়া যায় না।

তাই খাঁটি গুড় চিনতে আপনাকে অবশ্যাই দেখে শুনে গুড় কিনতে হবে। বাজারে হরেক রকমের গুড় বিক্রি হয় এর মধ্যে ভেজাল গুড় থাকে। বর্তমানে ভেজাল গুড় তৈরিতে মানুষ পারদর্শি যারা গুড় চেনে তারাই খাঁটি গুড়টি কিনতে পারে। তবে আজকের আর্টিকেল পরে আপনিও সামনে শীতে বাজার থেকে খাঁটি গুড় কিনতে পারবেন।
  • খেজুরের পাটালি গুড়
  • গন্ধ বুঝে গুড় কিনুন
  • গুড়ের রঙ
  • ঝোলা গুড়
  • গুড়ের উজ্জলতা
  • শক্ত গুড়
  • রসালো গুড়
  • গুড় পানিতে মেশান
  • গুড় নিয়ে হাতে চাপ দিন
  • অতিরিক্ত জাল দেওয়া গুড়
খেজুরের পাটালি গুড়: গুড়ের জনপ্রিয় হলো পাটালি গুড়। এই গুড় কিনতে হলে আপনাকে গুড় হাতে নিয়ে হালকা চাপ দিতেই যদি ভেঙ্গে যায় তাহলে বুঝবেন এটি খাঁটি পাটালি গুড়। যদি গুড় শক্ত হয় তাহলে বুঝবেন ভেজাল মিশ্রিত গুড়। কেনা থেকে বিরত থাকুন অন্নত্র দেখেন।

গন্ধ বুঝে গুড় কিনুন: খেজুরের গুড়ের যে গন্ধ তা আপনার মন জুড়িয়ে দেবে। তবে গুড়ের গন্ধ আনার জন্য অনেকে গুড় কিনে লসে পড়েন কারন রাসায়নিক মিশিয়ে সেই গন্ধ আনা হয়। তাই গন্ধের প্রেমে পড়ে কেউ গুড় কিনে ঠকবেন না।

গুড়ের রঙ: খাটি খেজুরের ‍গুড় মিষ্টি ও কালচে লাল ভাব হয়।  বাড়তি চিনি মেশানো গুড় দেখবেন হালকা সাদা ভাব। সাদা ভাব গুড় কিনবেন না কারন এতে রাসায়নিক বা ফিটকিরি মেশানো হয়।

ঝোলা গুড়: ঝোলা গুড় কিনতে বাজারে এসেছেন প্রথমে আপনি দোকান থেকে হালকা একটু গুড় হাতে নিয়ে মুখে দিন এরপর এর স্বাদ কেমন তা বুঝুন। যদি হালকা নোনতা ভাব হয় তাহলে কিনবেন না। করন ঝোলা গুড়ে নোনতা স্বাদ হয় না।

গুড়ের উজ্জলতা: বাজারে দেখবেন অনেক গুড় সুন্দর করে সাজিয়ে রেখেছে চকচক করছে বা দেখবেন স্ফটিকের মতো স্বচ্ছ লাগছে ঐ সব গুড় কিনতে বিড়ত থাকুন। কারন সেই গুড় খাঁটি না ভেজাল মেশানো।

শক্ত গুড়: শক্ত গুড় কখনোই কিনবেন না। কারন এই গুড় তৈরিতে খেজুরের রস বাদে প্রচুর চিনি মিশিয়ে পাটালি গুড় তৈরি করে। বাজারে কেনার সময় গুড়ের দুই ধারে দেখবেন শক্ত আর ধরালো কি না। এইরকম হলে অন্য কোথাও দেখে নরম গুড় দেখে কিনুন।

রসালো গুড়: বাজারে পাটালি গুড় কেনার সময় দোকানদারকে বলবেন ভেঙ্গে দেখাতে গুড়। গুড় ভেঙ্গে যাদি দেখেন হালকা রসালো ভাব মানে একদম শুকনো না হালকা নরম ভাব তাহলে সেই গুড় কিনতে পারেন। যদি শুকনো মনে হয় তাহলে কেনা থেকে বিরত থাকুন।

গুড় পানিতে মেশান: যদি এরকম হয় আপনি গুড় পরিক্ষা করে কিনবেন তাহলে একটি পানির গ্লাস নেন এবং এক গ্লাস পানিতে গুড়ের টুকরো ফেলে দিন যদি দেখেন গলে গেছে তাহলে বুঝবেন গুড় খাঁটি। আর যদি জমাট বেধে থাকে তাহলে ভেজাল।

গুড় নিয়ে হাতে চাপ দিন: বাজারে যাওয়ার পর বিভিন্ন গুড় দেখবেন যেটি গন্ধে ভালো সেই গুড় হাতে নিয়ে গুড়ের কোনা গুলো হাত দিয়ে হালকা চাপ দিবেন যদি হালকা চাপেই ভেঙ্গে যায় তাহলে গুড়টি কিনতে পারেন।

অতিরিক্ত জাল দেওয়া গুড়: যদি দেখেন গুড়েরর স্বাদ হালকা তিতা লাগছে তাহলে না কিনাই ভালো কারন হালকা তিতা মানেই অতিরিক্ত জাল দিয়ে গুড়টি তৈরি করা হয়েছে। যদি কিনে ফেলেন তাহলে স্বাদের পরিমান খুব কম পাবেন।

সাধারনত বাজারে আমরা যেইসব গুড় দেখতে পাই তা বেশির ভাগ হলেদেটে টাইপের হয় হলদেটে টাইপ গুড়গলো বেশিরভাগ রাসায়নিক মেশানো। তাই গুড়ের অরজিনাল কালার গাড় বাদামি দেখে কিনবেন। আশা করি বুঝতে পেরেছেন খাটি খেজুরের গুড় চেনার ১০টি উপায়। বাজারে যেয়ে পর্যবেক্ষন করে দেখতে পারেন।

খেজুরের গুড়ের পুষ্টি উপাদান

খেজুরের গুড়ের পুষ্টি উপাদান গুলো আমাদের শরীরের জন্য উপকার। কি কি পুষ্টি উপাদান রয়েছে খেজুরের গুড়ে যেমন ১০০ গ্রাম গুড়ে থাকে ১.৫ গ্রাম প্রোটিন, ০.৩ গ্রাম ফ্যাট, ৮৫.৭ গ্রাম থাকে কার্বোহাইড্রেট এবং থাকে ২.৫ গ্রাম আঁশ। এছাড়াও সামান্য পরিমান পাওয়া যায় ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়ম, পটাশিয়াম, ফসফরাস, সোডিয়াম, আয়রন, ম্যাঙ্গানিজ, জিংক, কপার ও ক্লোরাইড।

খেজুরের গুড়ের উপকারিতা কি কি

খেজুরের গুড়ের উপকারিতা কি কি আমরা শীতের সময় সাধরনত খেজুরের গুড় খেয়ে থাকি। খেজুরের গুড় খেলে আমাদের শরীরে ১০ রকমের উপকার হয়। শীতের সময় আমাদের পিঠা তৈরিতে খেজুরের গুড় দিয়ে থাকি স্বাদে যেমন ভালো খেতেও তেমন মজা লোভনীয় এই খাবার খেলে আমাদের শরীরে যেইভাবে উপকার করে তা নিম্নে আলোচানা করা হলো।
খেজুরের-গুড়ের-উপকারিতা-কি-কি
আয়রন ঘাটতি মেটায়: অনেকের শরীরে আয়রনের ঘাটতি দেখা যায়। যদি আপনার আয়রনের ঘাটতি থাকে তাহলে নানা রাকম রোগে আক্রান্ত হতে পারেন যেমন রক্তশূন্যতা ইত্যাদি তাই ঘাটতি মেটাতে খেজুরের গুড় খান।

নারীদের জন্য উপকারী: নারীদের মাসিক সময়ে এই খেজুরের গুড় উপকার। নারীদের এমন কিছু পুষ্টি দরকার পরে যা সব খাবারে থাকে না। এজন্য খেজুরের গুড় খেলে মাসিক সময়ে ব্যাথা কমাতে সাহায্য করে। এটা মাসিকের সময়ে এন্ডোরফিস নিঃসরণ করে ফলে পেটের ব্যাথা কমে।

হজমের সমস্যা দূর করে: যাদের কোষ্ঠকাঠিন্য, আমাশা, বদহজমের মতো সমস্যা রয়েছে তারা নিয়মিত অল্প করে খেজুরের গুড় খাবেন। খেজুরের গুড় হজম রস সক্রিয় করে ও পেট পরিষ্কার রাখে।

লিভার ভালো রাখে: খেজুরের গুড়ে থাকা প্রচুর সোডিয়াম ও পটাসিয়ম আমাদের লিভারকে ভালো রাখে ও শক্তিশালী করে। তাই লিভার ভালো রাখতে খেজুরের গুড় খান।

ত্বক ভালো রাখে: ত্বকের যত্নে আমরা কতো কিনা করি। ত্বক ভালো রাখার খদ্যের মধ্যে আপনি খেজুরের গুড় রাখতে পারেন। ত্বককে মসৃণ রাখতে ব্রণ ও ফুসকুড়ি কমাতে খেজুরের গুড় খান।

ঠান্ডা জনিত রোগ: শীতের সময় অনেকের কাশি হয়ে থাকে এটি ঠান্ডা জনিত রোগ। খেজুরের গুড় খেলে শরীর গরম থাকে। শুষ্ক কাশি নিরাময় করে মিউকাশ পরিষ্কার করে। শ্বাকষ্টজনিত সমস্যায় যারা আছেন তাদের জন্য ঘরোয়া উপায়ে খেজুরের গুড় খেতে পারেন।

ওজন কমায়: খেজুরের গুড়ে থাকা উচ্চ পটাশিয়াম শরীর থেকে পানি কমিয়ে ওজন কমাতে সাহায্য করে।

কোল্ড অ্যালার্জি: যাদের ঠান্ডায় অ্যালার্জি রয়েছে তারা নিয়মিত ১ চামচ খেজুরের ঝোলা/লালি গুড় খেতে পারেন উপকার পাবেন।

গ্লুকোজ: যাদের কার্বোহাইড্রেটের ঘাটতি রয়েছে তারা প্রতিদিন খেজুরের গুড় খেতে পারেন।

মাইগ্রেন: যাদের মাইগ্রেনের মত তৃব্য মাথা ব্যাথার সমস্যা রয়েছে তারা নিয়মিত ১ চামচ খেজুরের গুড় খেতে পারেন এতে ব্যাথার জন্য উপকার পাবেন।

তাই বিশেষ করে শীতের সময় খেজুরের গুড় খাওয়ার ধুম পড়ে যায়। নিয়মিত খেজুরের গুড় খেলে আপনার শরীর থাকবে গরম থাকবে শুস্থ্য।

খেজুরের গুড় english এ কি বলে

অনেকে খেজুরের গুড় english এ কি বলে এটা জানতে চেয়ে সার্চ করে থাকেন। আজকে আমরা এই খেজুরের গুড়ের আসোলে english কি বলে সেটা বলবো বেশি কিছু আলোচনা করব না যেটা আমরা জানতে চেয়েছি সুধু সেটাই জানাবো। তাহলে খেজুরের গুড় english এর পরিপূর্ন শব্দ হলো Date molasses এর মানেই হচ্ছে খেজুরের গুড়।

খেজুরের গুড় যেভাবে তৈরি হয়

খেজুরের গুড় যেভাবে তৈরি হয় শীতের সময় প্রথমে গাছীরা গাছ ছাটাই করে পরিষ্কার করে ফলে। রাতে কিংবা দুপুরে তারা গাছের আগাই ফিনকি করে কেটে রাখে ৭দিন রাখার পর শুকিয়ে গেলে আবার সেই স্থানে কাটলে রস বের হতে শুরু করে। মাটির হাড়ি এনে গাছের সাথে বেধে দেওয়া হয় রস গুলো জমা হওয়ার জন্য। পরের দিন সকালে হাড়ি ভরতি রস গুলো এনে একটি বরো লোহার ট্রেতে ছাকনি দিয়ে ছেকে ঢেলে দেওয়া হয়। ২ থেকে ৩ ঘন্টা ট্রেতে জাল দেওয়া হয় জাল দেওয়ার সময় রস থেকে ফেনা বেড় হয়। 
খেজুরের-গুড়-যেভাবে-তৈরি-হয়
ফেনা গুলো হাতল আলা ছাকনি দিয়ে ছেকে তুলে ফেলা হয় বাষ্পভিত হওয়ায় আসতে আসতে কমতে থাকে ফেনা তারপর ঝোলা অবস্থাই থাকে গুড় গুলো। এইবার চুলা থেকে নামিয়ে গুড়ের বিভিন্ন পাত্রতে ঝোলা গুড় ঢালা হয় শুকিয়ে গেলে গুড় তৈরি হয়ে যায়। খাঁটি রসের গুড়ের স্বাদ পেতে গুড়ের সাথে পানি মেশানো বা রাসায়নিক মেশানো ঠিক না এতে গুড়ের প্রকৃত গুনাগুন নষ্ট হয়ে যায় কিন্তু বর্তমানে এইসব বেশি হচ্ছে তাই সঠিক গুড় চিনতে আমাদের আর্টিকেল মোনোযোগ দিয়ে পড়ুন।

খেজুরের গুড়ের অপকারিতা

খেজুরের গুড়ের অপকারিতা জানতে চাচ্ছেন কোন জিনিস বেশি খাওয়া ঠিক না তেমন গুড়ও। যারা ডায়বেটিস এর রুগি আছেন তারাতো একদমি না যেহেতু গুড়ে চিনি আছে তাই চিনি ডায়বেটিস রুগিদের জন্য জীবন হারাম হয়ে গেছে। যাদের সমস্যা নাই বা মিষ্টি জিনিস খেতে বেশি পছন্দ করেন তাদের বলবো শীতের সময় খেজুরের গুড় মেইনটেন করে খাবেন বেশি খেলে যেইসব সমস্যাই পরতে পারেন তা হলো:

ভেজাল গুড় স্বাস্থ্যের ক্ষতি: এটি বর্তমানে অনেক গুরুত্বপূর্ন কথা যে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী গুড় তৈরি করে খেজুরের রস ছাড়াই। খেজুরের রস ছাড়াই ফিটকিরি, ডালডা, চিনি, চুন ও হাইড্রোজের মতো বিভিন্ন রাসায়নিক মিশিয়ে তৈরি করছে গুড়। এইসব গুড় খেয়ে মানুষের স্বাস্থ্যের হচ্ছে অনেক ক্ষতি। 

রক্তে বাড়তে পারে শর্করা: চিনির তুলনাই স্বাস্থ্যকর হলেও গুড় যেহেতু মিষ্টি তাই এটা অতিরিক্ত খওয়া ঠিক না অতিরিক্ত খেলে শরীরে শর্করার মাত্রা বাড়াবে। প্রতি ১০ গ্রাম গুড়ে থাকে ৯.৭ গ্রাম চিনি। তাই লোভে পরে অতিরিক্ত খেয়ে ফেলবেন না।

নাক থেকে রক্ত ক্ষরণ: সাধারণত আমরা শীত কালে খেজুরের গুড় পেয়ে থাকি কিন্তু গুড় সংরক্ষন রেখে অনেকে সারা বছর খায়। বিশেষ করে গরমের সময় যদি কেউ গুড় বেশি খেয়ে ফেলে তাহলে তার নাক থেকে রক্ত ক্ষরণের মত সমস্যাই পরতে পারে। তাই গরম কালে খেজুরের গুড় এড়িয়ে চলুন।

ওজন বৃদ্ধি পেতে পারে: প্রতি ১০০ গ্রাম গুড়ে থাকে ৩৮৫ গ্রাম ক্যালরি। যারা ওজন কমাতে চান তারা গুড় না খাওয়ায় শ্রেয়। যদি শীতের সময় পিঠা খেতে ইচ্ছে করে তাহলে খেতে পারেন অল্প পরিমানে সমস্যা হবে না কিন্তু অতিরিক্ত না।

হজমের সমস্যা: অনেকে আছেন গরম গরম খেজুরের গুড় পেট পুড়ে খেয়ে নেয় এটি গ্রামে বেশি দেখা যায় কেবল তৈরি করে উঠানো গুড় বাচ্চারা খেয়ে ফেলে ফলে পেটে ডায়রিয়া আবার কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যার কথাও শোনা গেছে।

দীর্ঘ মেয়াদি রোগ: যাদের দীর্ঘ-মেয়াদি রোগ যেমন বাতের ব্যাথা ইত্যাদি তাদের গুড় অল্প পরিমান খাবেন কারন এক গবেষণায় দেখা গেছে গুড়ে থাকা সুক্রোজ শরীরের ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিডের সঙ্গে বিক্রিয়া করে ব্যাথার মাত্র বেড়ে যেতে পারে।

মাছ আর গুড়: বাংলাদেশের মানুষ মাছে ভাতে বাঙ্গালি। মাছ থাকবেই তবে শীতের সময় গুড় থাকায় অনেকে দিনে মাছের তরকারী ঝাল হলে পরে হুট করে গুড় খেয়ে থাকে ঝাল মেটানোর জন্য কিন্তু এমনটা কখনোই করবেন না সমস্যা হবে।

আলসার: যাদের আলসারের সমস্যা রয়েছে তারা ভুল করেও গুড় খাবেন না তাদের খাওয়া একদমি মানা। আলসারেটিভ কোলাইটস অথ্যাৎ পরিপাকতন্ত্রে আলসারের সমস্যার রুগির গুড় খওয়া মানা।

জীবানু সংক্রমন: অনেক সময় দেখা যায় গ্রামে গুড় তৈরি করা হচ্ছে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে গুড় তৈরির ফলে জীবানু সংক্রামন হতে পারে গুড় খেয়ে পেট খারাপ হতে পারে। তাই গুড় তৈরিতে স্বাস্থ্যকর পরিবেশ বজায় রাখুন।

শেষ কথা

খাঁটি খেজুরের গুড় চেনার জন্য ১০টি উপায় সর্ম্পকে জানলেন এতক্ষন আমরা গুড়ের যাবতীয় আলোচনা করেছি। গুড় বা মিষ্টি জাতীয় জিনিস আমাদের একটি লোভনীয় খাবার। খাঁটি গুড় শীতের মৌসুমে পাওয়া যায়। খাটি গুড় পেতে চাইলে অবশ্যই শীতের মৌসুমে কিনবেন। লেখকের মন্তব্য ভালো লাগলে আমাদের ওয়েবসাইট ফলো করতে থাকুন এরকম গুরুত্বপূর্ন আর্টিকেল আমরা প্রতিনিয়ত প্রকাশ করে থাকি ধন্যবাদ।



এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

নেক্সাস আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url